১৫ দিনে চিকন হবার উপায়

 

 সুঠাম দেহ আর সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এই পৃথিবীতে কে না হতে চায়! আর এই চাওয়ার মাঝেই কেউবা স্রষ্টার সৃষ্টির স্বাভাবিক নিয়মেই স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের অধিকারী হন, কেউবা স্বাভাবিকের চেয়ে কম,আবার কেউবা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হন।

ইমেজ

 তবে এই স্বাভাবিক স্বাস্থ্য বা ওজনের চেয়ে কম অথবা বেশি দুটোই স্বাভাবিক জীবন চলার পথে কিছু জটিলতা বয়ে আনে। আজ আমরা এখানে জানবো, কিভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন বা স্বাস্থ্য যদি বেশি হয়ে থাকে, সেটা বয়স এবং উচ্চতার সাথে স্বাভাবিক অবস্থানে নিয়ে আসা যায় সেই বিষয়ে কিছু তথ্য।

পোস্ট সূচিপত্রঃ-

আপনার অতিরিক্ত ওজন কি আপনার হতাশার কারণ?

 আপনার এই উত্তরটি আমি নিজেই দিয়ে দিচ্ছি। হ্যাঁ, অবশ্যই বয়স এবং উচ্চতার তুলনায় অতিরিক্ত ওজন, অধিকাংশ স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য সচেতন ব্যক্তির জন্য হতাশার কারণ হয়ে থাকে। কারণ জীবনকে সুন্দরভাবে উপভোগ করার জন্য, প্রত্যেকটি মানুষের জীবনের সকল চাহিদার মাঝে একটি কমন এবং প্রথম চাওয়া হচ্ছে সুস্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্যের অধিকারী হওয়া। কেননা সুস্থ শরীর এবং প্রফুল্ল মন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমরা সকলেই কমবেশি এ কথাটি জেনে থাকি যে " স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল"।

 আর সেই স্বাস্থ্যই যদি ঠিক না থাকে অথবা ভালো না থাকে পৃথিবীতে সকল চাওয়া সকল পাওয়া যেন অর্থহীন। আর তাই আপনি যদি অতিরিক্ত ওজন অথবা স্থুলতার শিকার হয়ে থাকেন ,এটা নিয়ে শুধুমাত্র হতাশায় না ভুগে, এখান থেকে কিভাবে আপনি নিজেকে একজন সুস্থ, সুন্দর, স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের অধিকারী  একজন মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে গড়ে নিতে পারবেন আপনার মধ্যে সেই ইচ্ছে শক্তি এবং প্রচেষ্টাকেই নিয়ে আসতে হবে। কারণ চাইলে এবং চেষ্টা করলে পৃথিবীতে নিজের মনের মত করে অনেক কিছুই গড়ে নেওয়া সম্ভব। এজন্য আপনাকে যে পদক্ষেপগুলো নিতে হবে, চলুন জেনে নেই।

খাবার নিয়ন্ত্রণ করে কি ওজন কমানো সম্ভব

 ওজন এবং খাবার এ বিষয়টি যেন একে অন্যের সাথে পারস্পরিকভাবে সম্পর্কিত। কেননা আমাদের মানবদেহ অথবা অন্য যেকোনো প্রাণীর ক্ষেত্রেই হোক না কেন, ওজনের সাথে সম্পর্কিত আরো অন্যান্য বিষয়াদি ছাড়াও শুধু খাবারটাই যেন প্রথম এবং মুখ্য কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে হ্যাঁ, ওজন নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন উপায় বা পদ্ধতি গুলোর মধ্যে খাবার নিয়ন্ত্রণ করা একটি প্রধান পদ্ধতি বা পদক্ষেপ বলে গণ্য হতে পারে। কেননা আমাদের ওজন বৃদ্ধি অথবা কমার ক্ষেত্রে খাবার প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে।

 আমরা যদি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে স্বাভাবিক এবং সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত পুষ্টি গুণাগুণ সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকা অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করি, সে ক্ষেত্রে স্থুলতা অথবা পুষ্টিহীনতা কোনটাতেই ভোগার সম্ভাবনা আমাদের নেই বললেই চলে। তবে এক্ষেত্রে কেউ যদি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগে থাকেন, মানে রোগে আক্রান্ত থাকেন তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টি অন্যভাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। তবে এক কথায় বলা যায়, যেহেতু খাবার আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে পারস্পরিকভাবে সম্পৃক্ত। তাই আমরা অনায়াসেই আমাদের খাবারের বদ অভ্যাসগুলো ত্যাগ করে, স্বাস্থ্যসম্মত এবং পরিমিত খাবার গ্রহণের মাধ্যমে বা খাবার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ওজন কমাতে পারি।

রুটি খেলে কি ওজন কমে

 যেহেতু আমাদের জীবনে ওজনের সাথে খাবার অতপ্রতো ভাবে জড়িত, তাই প্রথমেই আমাদের মনে যে প্রশ্নটি আসে যে, কোন খাবার খেলে আমরা আমাদের ওজন কমাতে পারবো? অথবা কোন কোন খাবার আমাদের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে? যেহেতু আমাদের দেশের সংস্কৃতিতে রুটি মোটামুটি সবার কাছেই পরিচিত একটি খাবার। তাই আপনারা শুরুতে এটাই ভাবেন যে, যেহেতু ভাত খেয়ে ওজন বেড়ে যাচ্ছে। তাহলে কি আমরা ভাতের পরিবর্তে রুটি খেতে পারি?

 আমাদের দেশের ডাক্তার এবং পুষ্টিবিদরা এমন পরামর্শ হরহামেশাই দিয়ে থাকেন ,ওজন কমাতে বা ডায়াবেটিস কমাতে ভাতের বদলে রুটি খাওয়ার অভ্যাসে নিজেদেরকে অভ্যস্ত করতে। সাধারণ মানুষও আজকাল তা ভালোই জানেন ও মানেন। ভাতঘুম, বাসিভাত, পান্তাভাত, মাছভাত, বসাভাত, ঘি-ভাত ইত্যাদি নামে আমাদের সংস্কৃতিতে ভাত সংক্রান্ত কতই না শব্দের ছড়াছড়ি। তবে ভাত আর রুটি দুটোই তো "কার্বোহাইড্রেট" মানে "শর্করা"। আর সকল "শর্করা" জাতীয় খাবারই, খাবার পরে পরিপাকতন্ত্রে গিয়ে ভাঙ্গে।

 এবং রক্তে গিয়ে (Glucose) বা মনোস্যাকারাইড হিসেবে শোষিত হয়। যে Glucose হলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সকল কার্যক্রমের মূল চালিকাশক্তি। শরীরের প্রায় প্রতিটি শরীর বৃত্তীয় কাজে এই Glucose দরকার হয়। কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত Glucose বা শর্করা দেহে সঞ্চিত হয় ফ্যাট বা চর্বি হিসেবে। যা কিনা আমাদের ওজন বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিবেচিত। তাই বলা যায়, ভাতের বদলে রুটি খেয়ে আসলে লাভটা কি? দুটোই তো শর্করা। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, রুটি খেলে ওজন কমানো বা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে খুব একটা কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যাবে না।

আরো পড়ুনঃ-

প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায়

 প্রতিদিন এক কেজি করে ওজন কমানো এটি মূলত একটি কথার কথা বা অতি আকাঙ্খার কথা। তবে আমরা আমাদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে যদি বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি, ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া আমাদের জন্য জরুরী। সে ক্ষেত্রে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের কাঙ্ক্ষিত ওজন অর্জনের গন্তব্যে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে, এবার আমরা জেনে নেই, ঠিক কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো সেই বিষয়ে কিছু তথ্য-

ইমেজ


  • স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস পরিকল্পনা যেমন-সকালে পুষ্টিকর নাস্তা, নিয়মিত বিরতিতে খাবার গ্রহণ, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ইত্যাদি। 
  • দৈনন্দিন জীবনের খাদ্য তালিকায় ফাইবার এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা।
  • উচ্চ ক্যালরি সম্পন্ন খাবার পরিহার করা
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
  • মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া। কেননা অতিরিক্ত মানসিক দুশ্চিন্তা মানুষের জন্য ওজন বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ভূমিকা পালন করে
  • গ্রিন টি বা ব্ল্যাক কফি পান করতে পারেন
  • চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা
  • প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে দৈনিক কমপক্ষে ৬-৮ ঘন্টা। কেননা পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে অবসাদের হাত থেকে রক্ষা করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • এছাড়া দ্রুত ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন ইত্যাদি।

১ সপ্তাহে ১ কেজি ওজন কমানো স্বপ্ন নাকি সত্যি

 না, এক সপ্তাহে ১ কেজি ওজন কমানো এটি স্বপ্ন নয়। এটি সত্যি করা সম্ভব। একদিনে এক কেজি ওজন কমানো অসম্ভব হলেও, মানুষ যদি দৃঢ় প্রত্যয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গুলো গ্রহণ করে এবং খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে তার দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা করে। তাহলে এক সপ্তাহে এক কেজি ওজন কমানো আর স্বপ্ন হয়েই থাকবে না। সেটা বরং সত্য মানে, বাস্তবে রূপান্তরিত করা সম্ভব হবে। আর তাই আপনি যদি আপনার অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত থাকেন। তাহলে আর শুধু হতাশা নিয়ে জীবন না কাটিয়ে এক সপ্তাহে এক কেজি ওজন কমানোর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে পারেন।

 আপনার কাঙ্খিত স্বপ্ন সত্যি করার লক্ষ্যে আপনি যদি উপরে উল্লেখিত নির্দেশনা গুলো মনোযোগ সহকারে খুব ভালোভাবে পড়ে থাকেন এবং সেই অনুযায়ী আপনার দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা করার দৃঢ় প্রত্যয়ে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন, তাহলে নিশ্চয়ই আপনি এই হতাশা থেকে নিজেকে বের করে একটি সুস্থ, সুন্দর এবং স্বাভাবিক জীবন উপভোগ করার সুযোগ পেতে পারেন। তাই আর দেরি নয়, এখনই মনে মনে সংকল্প করুন এবং ওপরে উল্লেখিত নিয়ম অনুযায়ী নিজের জীবনকে পরিচালিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। যাতে আপনিও আপনার বয়স এবং উচ্চতার সাথে সম্পৃক্ত রেখে স্বাভাবিক ওজনের অধিকারী একজন সুস্থ-সবল মানুষ হয়ে জীবনকে উপভোগ করতে পারেন।

আপনার অনাকাঙ্ক্ষিত ওজন বৃদ্ধি কি ঝুঁকির কারণ?

 আপনাদের কারো মনে যদি কখনো এই প্রশ্নটি জেগে থাকে যে, অনাকাঙ্ক্ষিত ওজন বৃদ্ধি কি ঝুঁকির কারণ হিসেবে ভূমিকা রাখে? তবে হ্যাঁ, অবশ্যই আপনার প্রশ্নটি বা আপনার ধারণাটি সঠিক। কেননা মানুষের জীবন সুস্থ সুন্দরভাবে পরিচালিত হবার জন্য একটি নির্দিষ্ট বয়সের সাথে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ওজন আবশ্যক। তবে কোন কারণবশত যদি, সেই ওজনের তারতম্য ঘটে, মানে ওজন কোনভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যায় অথবা অতিরিক্ত হারে বেড়ে যায় তবে সেটা অবশ্যই এক বা একাধিক জটিলতা বা ঝুঁকির কারণ হতে পারে।

 অতিরিক্ত ওজন বা অনাকাঙ্ক্ষিত ওজন মানুষের জীবনে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। সেটা যেমন দৈনন্দিন জীবনের প্রাত্যহিক কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবে সম্পাদন করার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে, ঠিকমতো উঠতে বসতে, এমনকি শুয়ে থেকেও বিশ্রাম নিতে অস্বস্তি অনুভূতির সৃষ্টি করে ঠিক তেমনি নানা ধরনের জটিল, এমন কি প্রাণঘাতী রোগেরও জন্য দায়ী হয়ে থাকে। যেমন - উচ্চ রক্তচাপ, হাইপারকোলেস্টেরল, আরো অন্যান্য হৃদ রোগ, কিডনি রোগ, লিভার রোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে এমনকি প্রাণনাশেরও কারণ হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ-

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর ব্যায়াম

  মেয়েরা তাদের কাঙ্খিত ওজন এবং সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কত কিনা করে থাকেন। তবে সেই ক্ষেত্রে নিয়মিত শরীর চর্চা বা ব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। শরীরচর্চা শুধু মেয়েদের ক্ষেত্রেই নয় বরং শারীরিক গঠন এবং সুস্থতা বজায় রাখার জন্য এটি পুরুষ মানুষের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর তাই আপনি যদি স্থূলতা বা অনাকাঙ্ক্ষিত ওজন এর বিরম্বনায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনি,খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নিয়মিত শরীর চর্চা শুরু করতে পারেন। যা আপনার কাঙ্খিত ওজন অর্জনের জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে। আসুন জেনে নেই, কিভাবে আমরা নিয়মিত শরীর চর্চা করতে পারি সেই বিষয়ে কিছু তথ্য-

 কিছু কিছু ব্যায়াম আছে যা ওজন কমানোর জন্য, বহু বছর ধরে জনপ্রিয়। কোন জিমে না গিয়ে বা কোন প্রশিক্ষকের দ্বারস্থ না হয়েও আপনি নিশ্চিন্তে সেগুলো অভ্যাস করতে পারেন এবং হাতেনাতে ফল পেতে পারেন। তবে যারা একেবারেই ব্যায়াম করেন না, তারা যদি এই ধরনের ব্যায়াম গুলো শুরু করেন সেক্ষেত্রে প্রথম  শরীরে ব্যথা হতে পারে। তাই বলে বিচলিত হবেন না। আপনারা আপনাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন। আশা করি, একটা নির্দিষ্ট সময় পর আপনারা ফলাফল বুঝতে পারবেন। এবার আসুন জেনে নেই, কোন সেই সহজলভ্য শরীর চর্চা বা অনুশীলনগুলো-

 ব্যায়াম করার উদ্দেশ্যে আপনি প্রতিনিয়ত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। আপনি প্রতিনিয়ত যেভাবে হাঁটেন তার চেয়ে একটু দ্রুত পা চালালেই সেটা আপনার ব্যায়ামের পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। তবে ধীরে ধীরে গতিবেগ বাড়াতে পারেন।শুরুতে আপনি আধাঘন্টা হাঁটতে পারেন। এরপর আপনি ধীরে ধীরে সময়টা বাড়িয়ে নিতে পারেন। কমপক্ষে ঘন্টাখানেক সমান গতিতে হাঁটতে পারলে শুধু ওজন কমতেই শুরু করবে না বরং, আপনার শ্বাসযন্ত্র বা ফুসফুসের কার্যকারিতাও বাড়বে। হাঁটার রুটিনে অভ্যস্ত হবার কিছুদিনের পর থেকে আপনি স্প্রিন্ট বা শর্ট ডিসট্যাঁন্স দৌড় দেবার অভ্যাসটা গড়ে তুলতে পারেন ।

 প্রথমে ১০০ মিটার খুব দ্রুত দৌড়ানোর চেষ্টা করুন। তারপর কয়েক সেকেন্ড ব্রেক নিন। এরপর পুনরায় আবার আপনাদের স্টার্টিং পয়েন্টে দ্রুত দৌড়ে ফিরে আসার চেষ্টা করুন। তবে অবশ্যই খুব ভালো রানিং জুতা পরিধান করবেন। প্রথমদিকে ১৫ মিনিট বা আধাঘন্টা করে এভাবে দৌড়ানোর অভ্যাস করতে পারেন। তারপর প্রতি সপ্তাহে ৫-৭ মিনিট করে সময় বাড়াতে পারেন। শীতের ভোরে বা বিকেলে এই ব্যায়াম আপনার মনকে প্রফুল্ল করে তুলবে। এছাড়া আপনি প্রতিনিয়ত আরো বিভিন্ন কিছু ব্যায়াম যেমন-পুশ আপ এন্ড ডিপস, ক্র্যাঞ্চেস , স্কোয়াটস, দড়ি লাফ ইত্যাদি ব্যায়ামে নিজেকে অভ্যস্ত করে গড়ে তুলতে পারেন। যা আপনার ওজন দ্রুত কমাতে সহায়তা করবে।

১৮ বছর বয়সে ওজন কত হওয়া উচিত

 আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ১৮ বছর বয়স হলে, একজন মানুষকে প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ হিসেবে গণ্য করা হয়। সাধারণত প্রতিটি প্রাণীর ক্ষেত্রেই একটি নির্দিষ্ট বয়স এবং নির্দিষ্ট উচ্চতার সাথে একটি নির্দিষ্ট ওজনকে স্বাভাবিকভাবে বিবেচনা করা হয়। অর্থাৎ এক এক বয়সের সাথে সাথে একেক উচ্চতায় ওজনের স্বাভাবিক মাত্রা ভিন্নতর হয়ে থাকে। এখন আমরা জানবো, ১৮ বছর বয়সে মানুষের জন্য স্বাভাবিক ওজন কত কেজি বলে গণ্য করা হয়। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক।

ইমেজ

 সাধারণত শূন্য (০) থেকে ১৮ বছর বয়সে মানুষের জন্য বয়স বৃদ্ধির চার্ট থেকে স্বাভাবিক ওজন নির্ধারিত হয়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের পারসেন্টেজ বা শতকরা হার ব্যবহার করে থাকেন।মানুষ যেহেতু ১৮-২৫ বছর বয়স পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। তাই এই বয়সে বিএমআই (BMI) অনুযায়ী স্বাভাবিক ওজন ৫০ থেকে ৭০ কেজি হওয়া উচিত। ৫০ থেকে কম অথবা ৭০ থেকে যদি কারো ওজন অধিক হয়ে থাকে তাহলে সেই ওজনকে আর স্বাভাবিক ওজন বলা যায় না। আশা করি আপনারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

অতিরিক্ত ওজন কি বন্ধ্যাত্ব হবার কারণ

  জ্বি, অতিরিক্ত ওজন যেমন বিভিন্ন ধরনের জটিল এবং প্রাণঘাতী রোগের কারণ হিসেবে দায়ী। ঠিক তেমনি অতিরিক্ত ওজন মহিলা অথবা পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই বন্ধ্যাত্বের (Infertility) জন্য অনেকাংশে ভূমিকা পালন করে থাকে। যা কিনা আমাদের আগামীর পথ চলায় আমাদের বংশগতির ধারা স্বাভাবিকভাবে বজায় রাখার ক্ষেত্রে হুমকি স্বরূপ। জার্নাল অফ নিউরো সাইন্সে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয় যে, ওবেসিটি বা স্থুলতা মানুষের ব্রেইনের কাজ করার পদ্ধতিতে কিছু অদল বদল ঘটিয়ে বন্ধ্যাত্ব তৈরি করতে পারে।

 আর এই গবেষণা সামনে আসার পরেই চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তারা মানুষের ওজন নিয়ন্ত্রণ বা স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে সচেতন হবার পরামর্শ দিতে থাকেন। অতিরিক ওজন শুধু বন্ধ্যাত্বই সৃষ্টি করেনা বরং দুটি বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষিত হবার যে প্রবণতা সেটিও কমিয়ে দেয়। তবে গবেষণার এই হতাশা জনক বিবৃতির পাশাপাশি আরেকটি ভালো খবরও পাওয়া যায়। সেটি হচ্ছে-এই অতিরিক্ত ওজন যে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে, সেটা স্থায়ী রূপে করতে পারে না। যদি কোন ভাবে, ওজন কমানো যায় তাহলে, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে ওনারা দাবি করেন।

আরো পড়ুনঃ-

স্থুলতাকে চিরতরে বিদায় দিন, সুস্থ থাকুন

 উপসংহারঃ-আপনি যদি উপরে উল্লেখিত আলোচনা গুলো মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আপনি নিশ্চয়ই অতিরিক্ত বা অনাকাঙ্ক্ষিত ওজনের ঝুঁকি এবং তা থেকে পরিত্রাণের উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যেহেতু মানুষ তথা প্রতিটি প্রাণীরই পৃথিবীতে সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার জন্য এবং জীবনকে উপভোগ করার জন্য সুস্থ দেহ এবং সুস্থ মনের কোন বিকল্প নেই। তাই আসুন, আজ থেকে আমরা সকলেই সতর্ক হই এবং নিজেদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াই। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, দেশ তথা আগামী প্রজন্মের কল্যাণের লক্ষ্যে।

 যেহেতু একবার ওজন বেড়ে গেলে সেটাকে নিয়ন্ত্রণে আনা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই হতাশাগ্রস্থ না হয়ে, আপনি ধৈর্যের সাথে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে উপরে উল্লেখিত নিয়ম গুলো যদি অনুসরণ করতে পারেন, তাহলেই আশা করি আপনি আপনার অতিরিক্ত ওজনের বিড়ম্বনা থেকে নিজেকে মুক্ত করে একজন সুস্থ সবল তথা স্বাস্থ্যবান মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করতে পারবেন। কেননা একজন সুস্থ ব্যক্তি যেমন পরিবারের সম্পদ, ঠিক তেমনি দেশেরও সম্পদ। তাই হতাশা নয়, স্বাস্থ্যসম্মত জীবন অভ্যাস গড়ে তুলুন, সুস্থভাবে বাঁচুন।

 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অনুভবের কথার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url